লিথুয়ানিয়ার ইতিহাস কয়েক হাজার বছর আগে মানুষের বসতি স্থাপন দিয়ে শুরু।

 লিথুয়ানিয়ার ইতিহাস কয়েক হাজার বছর আগে মানুষের বসতি স্থাপন দিয়ে শুরু। কিন্তু দেশটির নাম উল্লেখ করা প্রথম লিখিত নথিটি ১০০৯ খ্রিস্টাব্দের। বাল্টিক জনজাতির অন্যতম লিথুয়ানিয়ানরা পরে প্রতিবেশী দেশগুলি দখল করে ১৩ তম শতাব্দীতে প্রতিষ্ঠা করেছিল লিথুয়ানিয়ার গ্র্যান্ড ডুচি (এবং একটি স্বল্প-স্থায়ী লিথুয়ানিয়া রাজত্বও)। গ্র্যান্ড ডুচি ছিল একটি সফল এবং স্থায়ী যোদ্ধা রাষ্ট্র। তারা প্রচন্ডভাবে স্বাধীন ছিল এবং তারা ইউরোপের অবশিষ্ট এলাকাগুলির মধ্যে একটি ছিল যারা খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহণ করে (১৪ শতকের শুরুতে)। রুথেনিয়া থেকে উঠে আসা এই প্রচন্ড শক্তি পূর্ব স্লাভস এর বৃহৎ দলগুলির বিজয়ের মাধ্যমে ১৫ শতাব্দীতে ইউরোপের এক বৃহত্তম রাষ্ট্র হয়ে ওঠে। ১৩৮৫ সালে ক্রেওয় ইউনিয়ন এর মাধ্যমে গ্র্যান্ড ডুচি পোল্যান্ডের সাথে গঠন করে একটি বংশগত ইউনিয়ন। পরবর্তীকালে লুবলিন ইউনিয়ন (১৫৬৯) পোলিশ–লিথুয়ানিয়ান কমনওয়েলথ তৈরি করে যা ১৭৯৫ সাল অবধি স্থায়ী ছিল। এর পরে পোল্যান্ডের বিভাজন-এর ফলে সর্বশেষে রাজনৈতিক মানচিত্র থেকে লিথুয়ানিয়া এবং পোল্যান্ড - উভয়েই মুছে যায়। পরবর্তী কালে লিথুয়ানিয়া বিশ শতকের আগে পর্যন্ত রাশিয়ান সাম্রাজ্য এর অধীনে বাস করত।


১৬ ফেব্রুয়ারি ১৯১৮ সালে লিথুয়ানিয়া একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসাবে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়া অবধি এটি স্বাধীন ছিল। পরে এটিকে মোলোটভ–রিবেন্ট্রপ চুক্তি এর শর্তে সোভিয়েত ইউনিয়ন দখল করে। এই সময়ে নাৎসি জার্মানি-এর নাৎসি বাহিনী সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিত করে। কিন্তু একটি সংক্ষিপ্ত দখলের পরে লিথুয়ানিয়া আবার সোভিয়েত ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত হয় এবং তা প্রায় ৫০ বছর স্থায়ী ছিল। অবশেষে ১৯৯০-১৯৯১ সালে লিথুয়ানিয়া রাজ্যের পুনঃ প্রতিষ্ঠানের আইন দ্বারা লিথুয়ানিয়া তার সার্বভৌমত্ব পুনরুদ্ধার করে। লিথুয়ানিয়া ২০০৪ সালে ন্যাটো জোটে যোগ দেয় এবং ২০০৪ সালের সম্প্রসারণ এর অংশ হিসাবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন-এ যোগ দেয়।


রাষ্ট্র গঠনের আগে

শেষ তুষার যুগ এর অন্তিম পর্বে যখন হিমবাহ হ্রাস পেয়েছিল তখন খ্রিস্টপূর্ব দশম সহস্রাব্দের দ্বিতীয়ার্ধে মানুষ প্রথম আধুনিক লিথুনিয়ার ভূখণ্ডে এসে পৌঁচেছিল। ইতিহাসবিদ মারিজা গিম্বুটাস এর মতে এই ব্যক্তিরা দুটি দিক থেকে এসেছিল: জটল্যান্ড উপদ্বীপ এবং বর্তমান পোল্যান্ড থেকে। তাদের ব্যবহৃত সরঞ্জাম দ্বারা প্রমাণিত যে তারা দুটি পৃথক সংস্কৃতি নিয়ে এসেছিল। তারা শিকারী যাযাবর ছিল বলে তারা কোনও স্থায়ী বসতি গড়ে তোলেনি। খ্রিস্টপূর্ব ৮ ম সহস্রাব্দে জলবায়ু অনেক উষ্ণতর হয়ে ওঠে এবং ততো দিনে বনভূমিরও বিকাশ ঘটে। বর্তমানে লিথুয়ানিয়া অঞ্চলের বাসিন্দারা তখন কম ঘুরে বেড়াত এবং স্থানীয় শিকার, খাদ্য সঞ্চয় করা এবং মিঠা জলে মাছ ধরাতে ব্যাপৃত থাকত। খ্রিস্টপূর্ব ৬ষ্ঠ–৫ম সহস্রাব্দে তারা বিভিন্ন প্রাণীকে গৃহপালিত করে ছিল এবং বৃহত্তর পরিবারগুলিকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য ঘরগুলি আরও পরিশীলিত করা হয়েছিল। রুক্ষ জলবায়ু ও ভূখণ্ড এবং জমি চাষের উপযুক্ত সরঞ্জামের অভাবে তখনো পর্যন্ত খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় সহস্রাব্দের আগে কৃষির উত্থান হয়নি। এ সময়ে অবশ্য কারুশিল্প এবং বাণিজ্য গঠন শুরু হয়েছিল। সম্ভবত খ্রিস্টপূর্ব ৩২০০/৩১০০ সালের দিকে উত্তর-পশ্চিমের ইন্দো-ইউরোপীয় কথকরা কর্ডেড অয়ার সংস্কৃতি নিয়ে এখানে হাজির হয়েছিল।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

Switzerland Schengen Visa

Ministry of Foreign Affairs All country

আসওয়ান হল মিশরের সবচেয়ে রৌদ্রজ্জ্বল দক্ষিণী শহর